শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ০১:৪৫ অপরাহ্ন

যুদ্ধ এত দীর্ঘ হবে?

স্বদেশ ডেস্ক:

ইউক্রেন ও রাশিয়ার যুদ্ধ যে দীর্ঘ হবে, সে কথা শুরুতেই বলেছিলেন ফরাসি প্রেসিডেন্ট ইমানুয়েল ম্যাক্রন। এরপর কদিন আগে ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী বরিস জনসন বলেছেন, তার ধারণা আগামী বছরের শেষ পর্যন্ত এ যুদ্ধ চলবে। কিন্তু এখন যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস বলেছেন, রাশিয়া ও ইউক্রেনের যুদ্ধ ১০ বছর পর্যন্ত চলতে পারে।

বিবিসি জানিয়েছে, পররাষ্ট্রনীতি-বিষয়ক এক অনুষ্ঠান শেষে ট্রাস পশ্চিমা বিশ্বকে সতর্ক করে বলেন, রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিন সফল হলে ইউরোপজুড়ে দুর্দশা আরও বাড়বে এবং বিশ্বে ভয়াবহ পরিণতি তৈরি হবে। দীর্ঘ সময় ইউক্রেনে এ যুদ্ধ চলতে পারে এবং ইউরোপকে এর জন্য প্রস্তুত থাকতে বলেন তিনি। খবর রয়টার্সের।

যুক্তরাজ্যের সরকারি কর্মকর্তাদের আশঙ্কা, রাশিয়াকে ইউক্রেনের অঞ্চল দখলের সুযোগ করে দিলে পুতিন প্রতিবেশী জর্জিয়া মলদোভায় হামলা করতে পারেন। পররাষ্ট্রমন্ত্রী লিজ ট্রাস গতকাল তার বক্তব্যে পুতিনকে মরিয়া ও বেপরোয়া হিসেবে অভিহিত করে বলেন, তার এই আগ্রাসনের বিরুদ্ধে প্রতিরোধ গড়ে তুলবে হবে। লিজ ট্রাস বলেছেন, গ্রেট ব্রিটেন এবং তার মিত্রদের দ্রুততার সঙ্গে আরও একধাপ এগিয়ে ইউক্রেন থেকে রুশ বাহিনীকে তাড়িয়ে রাশিয়ায় ফেরত পাঠানো উচিত।

যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, ইউক্রেন সংকটকে অবশ্যই একটি অনুঘটক হিসেবে ব্যবহার করা উচিত, যাতে পশ্চিমের দৃষ্টিভঙ্গি ও আন্তর্জাতিক নিরাপত্তা নিয়ে অবস্থান পাল্টানো যায়। এদিকে যুক্তরাজ্যের বিশ্বজুড়ে কৌশলগত জোট তৈরি করতে হবে এবং আগ্রাসনকারীদের ঠেকাতে অর্থনৈতিক শক্তি ব্যবহার করতে হবে। তিনি বলেন, বিশ্বের উন্নত দেশগুলোর জোট জি ৭-এর অবশ্যই একটি অর্থনৈতিক ন্যাটো হিসেবে এবং সবার সমৃদ্ধি ও নিরাপত্তায় কাজ করতে হবে।

এদিকে যুক্তরাজ্যের পররাষ্ট্রমন্ত্রী যখন এ কথা বলছেন, একই দিনে ইউক্রেনে হস্তক্ষেপ করার ব্যাপারে পশ্চিমাদের সতর্ক করেছেন পুতিন। ‘কৌশলগত নিরাপত্তা’ হুমকির মুখে পড়লে রাশিয়া অস্ত্র ব্যবহারে পিছপা হবে না বলে প্রেসিডেন্ট পুতিন হুশিয়ারি উচ্চারণ করেছেন। গতকাল সেন্ট পিটার্সবার্গে আইনপ্রণেতাদের এক অনুষ্ঠানে তিনি এ হুশিয়ারি দেন। ইউক্রেনে কোনো দেশ যদি ‘হস্তক্ষেপ’ করে, তা হলে মস্কোর পক্ষ থেকে দ্রুত জবাব দেওয়া হবে বলেও সতর্ক করেন তিনি।

২৪ ফেব্রুয়ারি প্রেসিডেন্ট পুতিনের নির্দেশে ইউক্রেনে ‘বিশেষ সামরিক অভিযান’ শুরু করে রুশ বাহিনী। একে আগ্রাসন হিসেবে অভিহিত করে যুক্তরাষ্ট্র, যুক্তরাজ্যসহ ইউরোপের দেশগুলো রাশিয়ার বিরুদ্ধে একের পর এক নিষেধাজ্ঞা দিয়েছে। কিন্তু ইউরোপের দেশগুলোর রাশিয়ার জ্বালানির ওপর নির্ভরশীলতার কারণে দেশটির জ্বালানি আমদানিতে নিষেধাজ্ঞা দেয়নি। এদিকে পশ্চিমাদের একের পর নিষেধাজ্ঞা সত্ত্বেও রুশ বাহিনী এখনো ইউক্রেনে হামলা বন্ধ করেনি।

যুদ্ধের সমাপ্তি নির্ভর করছে রাশিয়ার ওপর

ইউক্রেন যুদ্ধ কতদিন চলবে, তার পুরোপুরি নির্ভর করছে রাশিয়ার সিদ্ধান্তের ওপর। বুধবার রুশ প্রেসিডেন্ট ভøাদিমির পুতিনের সঙ্গে বৈঠক শেষে মার্কিন সংবাদমাধ্যম সিএনএনকে দেওয়া এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য জানিয়েছেন জাতিসংঘের মহাসচিব অ্যান্তোনিও গুতেরেস।

সিএনএনের সাংবাদিক অ্যান্ডারসন কুপারকে দেওয়া সেই সাক্ষাৎকারে জাতিসংঘ মহাসচিব বলেন, ‘কেবল বৈঠকের মাধ্যমে এই যুদ্ধের সমাপ্তি টানা সম্ভব নয়। এই যুদ্ধ আসলে তখনই শেষ হবে, যখন রাশিয়া এটি থামাতে আন্তরিক হবে। তবে তার আগে প্রয়োজন একটি যুদ্ধবিরতি; আর সেটি আসতে পারে রাজনৈতিক সমঝোতার মাধ্যমে, যা এ মুহূর্তে সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ।’

পুতিনের সঙ্গে মুখোমুখি বৈঠক করতে সোমবার রাশিয়া সফরে গিয়েছিলেন গুতেরেস। পরের দিন পুতিনের সঙ্গে সাক্ষাৎ হয় তার। যুদ্ধের সমাপ্তি টানার পাশাপাশি ইউক্রেনের উত্তরাঞ্চলীয় শহর মারিপোলসহ দেশটির যেসব অঞ্চল রুশ বাহিনীর দখলে গেছে, সেসব এলাকায় মানবিক সহায়তা প্রদান ও বেসামরিক লোকজনদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়ে বৈঠকে রাশিয়ার সহযোগিতা চান জাতিসংঘের মহাসচিব।

পুতিন বলেছেন, জাতিসংঘ ও আন্তর্জাতিক মানবিক সহায়তা সংস্থা রেড ক্রসের যদি সহায়তা কার্যক্রম ও বেসামরিক লোকজনদের সরিয়ে নেওয়ার বিষয়টি তত্ত্বাবধান করে, সে ক্ষেত্রে মস্কো তাতে আদর্শগত সমর্থন দেবে।

দয়া করে নিউজটি শেয়ার করুন..

© All rights reserved © 2019 shawdeshnews.Com
Design & Developed BY ThemesBazar.Com
themebashawdesh4547877